কুরআন থেকে নেওয়া জীবনের পাঠ, কুরআন পড়ি- জীবন গড়ি Natural misty sonali
সংক্ষেপে- কীভাবে কুরআন আমাদের জীবনের সাথে কথা বলে, কীভাবে কুরআন আমাদের জীবনে আলোর দিক হতে পারে, কীভাবে আমরা কুরআনের আয়াত থেকে রত্ন ও মুক্তা আহরণ করতে পারি, কীভাবে কুরআন আমাদের চিন্তার জগতে নতুন মাত্রা আনুন—এমন একটি শৈলী সহ যা পাঠক পরিচিত হবে। ঠিক আছে, একটি প্রথাগত গদ্য বা একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ নয়, প্রতিটি অধ্যায়ে পাঠক তার জীবনের প্রতিফলন, তার জীবনের একটি ঘটনা বা কুরআন কিভাবে তার চারপাশের পরিচিত জগতের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত তা দেখতে পাবেন। জীবনের গল্প পড়তে পড়তে পাঠক প্রবেশ করবে কুরআনের চিন্তার জগতে, সেই জগত থেকে আলো ধার করে পাঠক ফিরে আসবে জীবনের প্রবাহে- এভাবেই 'কুরআন থেকে নেওয়া জীবনের শিক্ষা' বইটি। সাজানো হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।
কুরআন শিক্ষার প্রতিদান: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম সেই ব্যক্তি যে নিজে কুরআন শিখে এবং অন্যকে শেখায়।" (বুখারী)
কুরআন তেলাওয়াতের সওয়াব: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি পবিত্র কুরআনের একটি অক্ষর তেলাওয়াত করবে, সে একটি নেক আমল পাবে। আর একটি নেক আমল দশটি নেক আমলের সমান।" (তিরমিযী)
মনোযোগ সহকারে কুরআন তেলাওয়াতের পুরস্কার: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি কুরআন তিলাওয়াত করে এবং তা মুখস্থ করার প্রতি যত্নবান হয় (এবং এর নিয়মাবলী) সে সম্মানিত ফেরেশতাদের সাথে থাকবে। . আর যে ব্যক্তি কষ্ট সহ্য করেও কুরআন তেলাওয়াত করবে এবং এর সাথে নিজেকে যুক্ত রাখবে, সে দ্বিগুণ সওয়াবের অধিকারী হবে।” (বুখারী ও মুসলিম)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “কিয়ামতের দিন কুরআন পাঠকারীকে বলা হবে, কুরআন পড় এবং আরোহণ কর। দুনিয়াতে তারতীলের সাথে যেভাবে পড়েন সেভাবে কুরআন পড়ো। যেখানে তোমার আয়াত পাঠ শেষ হবে, জান্নাতের সেই সুউচ্চ স্থানে তোমার আবাস।" (তিরমিযী)
ইমাম আল-খাত্তাবী (রহঃ) বলেনঃ হাদিসে উল্লেখ আছে যে, জান্নাতে যাওয়ার সিঁড়ির সংখ্যা কুরআনের আয়াতের সংখ্যা। কোরআন তেলাওয়াতকারীকে বলা হবে, যতটুকু কোরআন পাঠ করবে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠো। যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ কুরআন পড়েছে সে পরকালে জান্নাতের শেষ সিঁড়িতে আরোহণ করবে। যে ব্যক্তি কুরআনের কিছু অংশ তিলাওয়াত করবে সে সেই পরিমাণে উঠবে। অর্থাৎ যেখানে সে পড়ালেখা শেষ করবে, সেখানেই তার সওয়াব শেষ হবে।
কুরআন সুপারিশকারী হবে: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “কুরআন তেলাওয়াত কর। কেননা কিয়ামতের দিন কুরআন পাঠকারীর জন্য সুপারিশকারী হবে।” (মুসলিম) তিনি আরো বলেনঃ “রোযা ও কুরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে”। (আহমদ, হাকীম হাদীস সহীহ ড. সহীহ তারগীব তারহীব হা/984)
একে অপরের সাথে কুরআন নিয়ে আলোচনা করার সওয়াব: রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "যদি কোন সম্প্রদায় আল্লাহর ঘরে একত্রিত হয় এবং কুরআন তেলাওয়াত করে এবং তা থেকে শিক্ষা নেয়, তবে তাদের উপর প্রশান্তি নেমে আসে। তাদের, আল্লাহর রহমত তাদের ঢেকে রাখে এবং ফেরেশতারা তাদের ঘিরে রাখে এবং আল্লাহ তাদের নিকটতম ফেরেশতাদের সামনে আলোচনা করেন।" (মুসলিম)
কুরআন কিভাবে পড়তে হয়? আনাস বিন মালিক (রাঃ) কে নবীর কুরআন তিলাওয়াতের পদ্ধতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ তিনি তা তিলাওয়াত করতেন। ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ পাঠ করার সময় তিনি ‘বিসমিল্লাহ’ পাঠ করতেন। "ও রহমান" পড়তেন "আর রহিম" পড়তেন। (বুখারী)
কোরান আল্লাহর পবিত্র কালাম। কোরান শব্দের অর্থ যা পাঠ করা, পাঠযোগ্য এবং বারবার পড়ার যোগ্য। কোরানের অর্থ যা নৈকট্য বা নৈকট্য অর্জনের মাধ্যম। কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করা যায় বলেই এই নামকরণ।
পবিত্র কোরআনে অবতীর্ণ প্রথম সূরার প্রথম আয়াতের প্রথম শব্দে তেলাওয়াতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। "আবৃত্তি কর, তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।" (সূরা-96 আলাক, আয়াত: 1)। কোরআন তেলাওয়াত মানে আল্লাহর সাথে কথোপকথন করা। "দয়াময় আল্লাহ মানুষকে কুরআন শিক্ষার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন, তাকে ভাব প্রকাশের শিক্ষা দিয়েছেন।" (সূরা-৫৫ রহমান, আয়াত: ১-৪)।
তিলাওয়াত অর্থ পাঠ করা, অধ্যয়ন করা এবং আবৃত্তি করা। কুরআন তিলাওয়াত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ কাজ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'এবং তোমরা পবিত্রভাবে কুরআন পাঠ কর।' (সূরা-৭৩ মুজাম্মিল, আয়াত: ৪)। এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে, উম্মে সালামা (রা.) বর্ণনা করেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিটি অক্ষর স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করে এবং প্রতিটি আয়াতে বিরতি দিয়ে কুরআন তেলাওয়াত করতেন। বাক্য।" (তিরমিযী)।
কুরআন তিলাওয়াত ও শুনলে ইমান বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'যখন তাদের কাছে কোরআন তেলাওয়াত করা হয়, তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায়।' (সূরা-৮ আনফাল, আয়াত: 2)। প্রাথমিক 7টি জিনিসের মধ্যে একটি যা মুসলমানদের বিশ্বাস করতে হবে তা হল 'কিতাবে' বিশ্বাস করা। কিতাব অর্থ গ্রন্থ বা গ্রন্থ। কুরআন সর্বশেষ ঐশী গ্রন্থ।
কালাম পাক পাঠের তিনটি বিশেষ উপকারিতা রয়েছে। যথা, মনের ময়লা দূর হয় এবং কলাবশ পরিষ্কার হয়। আল্লাহ তায়ালার ভালবাসা বৃদ্ধি পায় এবং নৈকট্য লাভ করে।
"পড়ার জন্য আপনাকে আনেক অনেক ধন্যবাদ"
No comments